২৬ শে অক্টোবর রবিবার আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আয়োজিত "যা সম্পাদিত না তা সংবাদ নয়" শীর্ষক সেমিনার ও মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশী সাংবাদিক ও লেখক নিউইয়র্ক ভিত্তিক বাংলা সংবাদ মাধ্যম ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ও জার্মানীর বৈশ্বিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান জনাব খালেদ মুহিউদ্দীন। সভায় সভাপতিত্ব করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ ও বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পুরো পৃথিবীকে একটি বিশাল ‘আনফিল্টারড নিউজরুমে’ পরিণত করেছে। এর ফলে আমরা এত দ্রুত তথ্য প্রকাশ করতে চাই, এত দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাই যে চিন্তা করার সময়ই পাই না— সত্যি সেটা ঘটেছে কিনা। এখন ‘ভাইরাল’ শব্দটা ‘ভেরিফিকেশন’ শব্দটাকে মেরে ফেলেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, আমরা এমন এক সময় পার করছি যেখানে সম্পাদনার জায়গা নিয়ে নিয়েছে অ্যালগরিদম।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের সময় এমন অনেককে জানি, যাদের অবজারভার পত্রিকাই পড়তে হতো। সেই পত্রিকাই পড়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতেন; কোনো তুলনা করতেন না। তিনি পরিচালিত হতেন ওই পত্রিকা দিয়ে। ফলে তাঁর জীবনে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বর্তমানে সেই বিষয়টি আর নেই। আমাদের বুঝতে হবে, সাংবাদিকতা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে।
আলোচনায় খালেদ মহিউদ্দিন বলেন, সংবাদ হতে হলে তা অবশ্যই সম্পাদনার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে শুধু সম্পাদিত হলেই তা সংবাদ হয় না।
তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগকে আমি মানবসভ্যতার চাকা আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনা করি। এই সময়ে সাংবাদিকরা ভোক্তাদের কী দিচ্ছেন— তা যদি পুনর্মূল্যায়ন না করেন এবং সংজ্ঞাকে নতুনভাবে নির্ধারণ না করেন, তাহলে শিগগিরই সাংবাদিকতা গুরুত্ব হারাবে।
খালেদ মুহিউদ্দীন বলেন, পৃথিবীতে একটা ক্লাসিক বিতর্ক আছে— পূর্ণাঙ্গ সাংবাদিক কে: রিপোর্টার নাকি সম্পাদক? টেলিভিশন সাংবাদিকতার যুগে আমরা রিপোর্টার ও এডিটরদের সেই ক্লাসিক্যাল ফাইটটা আর খুব একটা দেখি না, তবে অনেক জায়গায় তা এখনও চলছে। দিনশেষে পূর্ণাঙ্গ সাংবাদিক রিপোর্টাররাই, কারণ রিপোর্টাররা সংবাদ সংগ্রহ করেন— যা সম্পাদকরা করেন না। রিপোর্টাররা সংবাদ সংগ্রহ না করলে কোনো খবরই সামনে আসত না।