ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং প্রকৃতি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ দ্বিজেন শর্মা-এর এর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এক শোকবাণীতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ড. মো: আখতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে বিজ্ঞান, প্রকৃতি ও নিসর্গবিষয়ক লেখালেখিরও পথিকৃৎ দ্বিজেন শর্মা। গাছের পরিচর্যা, সংরক্ষণ এবং প্রকৃতিবান্ধব শহর গড়ার জন্য নিরন্তর কাজ করেছেন তিনি। প্রকৃতিবান্ধব হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন শিশু-কিশোর ও তরুণদের। তাঁর অসামান্য অবদান দেশবাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
উপাচার্য দ্বিজেন শর্মার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
দ্বিজেন শর্মার পোশাকি নাম দ্বিজেন্দ্র শর্মা। তিনি তৎকালীন সিলেটের বড়লেখা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে ১৯২৯ সালের ২৯ মে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৭ সালে মাধ্যমিক ও ১৯৪৯ সালে আগরতলার মহারাজা বীরবিক্রম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলকাতার সিটি কলেজ থেকে জীববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক করেন। পরে ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। স্নাতকোত্তর পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে ডেমোনেস্ট্রেটর হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে দ্বিজেন শর্মার শিক্ষকতা জীবনের শুরু করেন। এরপর তিনি নটরডেম কলেজ, কায়েদে আজম কলেজ, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ ও সরকারি বাংলা কলেজে শিক্ষকতা করেন। তিনি ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার মস্কোর প্রগতি প্রকাশনে অনুবাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি এশিয়াটিক সোসাইটিতে যোগ দেন। কর্মময় জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১৫ সালে একুশে পদক, ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র পদক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন পরিবেশ পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, দ্বিজেন শর্মা গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার ভোরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগগ্রাহী রেখে গেছেন।
--------------
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়