হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী আবাসিক হল। মুহসীন হল 1967 সালে তৎকালীন সর্ববৃহৎ আবাসিক হল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই হলটির নামকরণ করা হয়েছে উপমহাদেশের অন্যতম শিক্ষানুরাগী এবং দানবীর হাজী মুহম্মদ মুহসিনের নামে। উপমহাদেশের ইতিহাসের এই বিখ্যাত দানবীর মুহম্মদ মুহসিন 1732 সালের 3 জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে জন্মগ্রহণ করেন। হলে সর্বমোট 395টি কক্ষ রয়েছে যেখানে 1266 জন ছাত্র অবস্থান করে যাদের মধ্যে 539 জন আবাসিক এবং 727 জন দ্বৈতাবাসিক। উপরন্ত হলের অধীনে 1324 জন অনাবাসিক ছাত্র রয়েছে যাদের প্রশাসনিক কর্মকান্ড হলের অধীনে সম্পন্ন হয়। ছাত্রদের শিক্ষা ও আনুসাঙ্গিক সহযোগিতার জন্য বর্তমানে 12 জন আবাসিক শিক্ষক সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। হলের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: নিজামুল হক ভূইয়া। মুহসীন হল ছাত্রদের মেধা, নৈতিকতা ও যোগ্যতা বৃদ্ধিতে অবকাঠামোগত সুবিধা ও সহশিক্ষামূলক কর্মকান্ডের আয়োজন করে থাকে। দুইটি পাঠকক্ষ, গিয়াসউদ্দিন পাঠাগার নামে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার ও সংবাদপত্র পাঠকক্ষ রয়েছে। সুস্থ বিনোদন ও শরীরচর্চার জন্য রয়েছে একটি টিভি রুম, একটি গেমস রুম ও সুবিশাল খেলার মাঠ। হলের অভ্যান্তরে রয়েছে একটি নয়নাভিরাম বাগান। ছাত্রদের পুষ্টিকর ও সাশ্রয় মূল্যে খাবার সরবরাহের জন্য হলে একটি ক্যন্টিন ও ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত ‘ফয়ট’স এন্টারটেইনমেন্ট নামে একটি মেস রয়েছে। আরও রয়েছে একটি প্রার্থণা কক্ষ (মসজিদ), নরসুন্দর ও লন্ড্রি। ছাত্রদের নেতৃত্ব ও সেবামূলক মানসিকতার বিকাশে হলের সহযোগিতায় একটি ডিবেটিং ক্লাব, স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন ‘বাধঁন’ এর মত সঙ্গগঠন রয়েছে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্ররাজনীতির চর্চার জন্য রয়েছে কার্যকর হল ছাত্রসংসদ। প্রতিবন্ধী ছাত্রদের আবাসন ও যাতায়েতের জন্য আছে আলাদা কক্ষ ও র্যাম্প। ছয় তলা ভবনে উঠানামার জন্য রয়েছে দুইটি লিফট। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এবং প্রথিতযশা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ অনেক গুণীজন ছাত্রাবস্থায় এই হলের শিক্ষার্থী ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই হলের আবাসিক শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন যাদের মধ্যে একজন আবাসিক শিক্ষক সহ মোট 10 জন শাহদাত বরণ করেন। |