ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম গতিশীল করা, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থীদের জীবনমান উন্নয়ন, বিভিন্ন সংকট নিরসন, সহশিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম জোরদার এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানকে আরও সম্মানজনক পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সপ্তাহে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের সাপ্তাহিক হালনাগাদ তথ্য পরিবেশিত হলো:
১। ক) ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ১৪ জুলাই ২০২৫ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘জুলাই উইমেন্স ডে’ উদযাপন করা হয়। রাজু ভাস্কর্যের সামনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা অংশ নেন। এদিন ছাত্রীরা আন্দোলনের দিনের মতো হল থেকে মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। তারা সেদিনের স্লোগান পুনরায় দেন এবং রাতভর দিবসটি উদযাপনে নানা কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা, তথ্য ও সম্প্রচার, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনর্জাগরন অনুষ্ঠানমালা আয়োজন বিষয়ে সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্র্শনী, প্রতিবাদী গান, স্মৃতিচারণ ও ড্রোন শো-এর আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে এলইডি বোর্ড স্থাপন করে অনুষ্ঠান দেখার ব্যবস্থা করা হয়।
খ) রাজু ভাস্কর্যের সামনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভ্যুত্থানে নারী শিক্ষার্থীদের অসামান্য ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রতি বছর ১৪ জুলাই ‘নারী শিক্ষার্থী দিবস’ পালন করার ঘোষণা দেন। এছাড়াও, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী প্রতিরোধের ঐতিহাসিক অবদানের স্মরণে প্রতি বছর ১৭ জুলাই ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ পালন করা হবে বলে তিনি জানান। উপাচার্য বলেন, এ দিবস দু’টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
গ) ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- জুলাই বিপ্লব ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে প্রত্যেক অনুষদে ১টি করে সেমিনার আয়োজন এবং হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটসমূহের উদ্যোগে পৃথকভাবে আলোচনা সভা/সেমিনার আয়োজন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান: তারুণ্যের কন্ঠস্বর’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দু’দিনব্যাপী আন্ত:বিভাগ বিতর্ক উৎসব আয়োজন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন।
২। ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
(ক) বিজয় একাত্তর হলে উপাচার্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘জুলাই স্মৃতি উদ্যান’ উদ্বোধন করেন। এসময় হল প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর এবং হলের আবাসিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
(খ) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে উপাচার্য ‘জুলাই স্মৃতি স্তম্ভ’-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়া, হলের সংস্কারকৃত টিভি রুম, রিডিং রুম, মসজিদ, মেডিসিন কর্নার এবং ক্যান্টিনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করেন। এর আগে উপাচার্য হলে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, হল প্রাধ্যক্ষ এবং হলের আবাসিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
(গ) কবি জসীম উদ্দীন হল অডিটোরিয়ামে এক বিশেষ স্মৃতিচারণ, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য হলে জুলাই কর্ণার, সংস্কারকৃত দক্ষিণ ভবন, হল মসজিদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সংযোজন কার্যক্রম এবং প্রাধ্যক্ষ কার্যালয়ের আধুনিকীকায়নসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন করেন। এছাড়া, হলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ছাত্র-শিক্ষক বিতর্ক, বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচি এবং স্পট কুইজ আয়োজন করা হয়। এসময় হল প্রাধ্যক্ষ এবং আবাসিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
(ঘ) ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে আয়োজিত ‘বিপ্লব ও প্রতিবাদের অনন্য অধ্যায়: জুলাই স্মরণে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। পরে তিনি হলে ‘জুলাই প্রতিরোধ প্রাঙ্গণ’-এর উদ্বোধন করেন। এসময় হল প্রাধ্যক্ষ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং হলের আবাসিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
(ঙ) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ‘স্মৃতিতে স্মরণে রক্তিম জুলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এসময় হল প্রাধ্যক্ষ এবং হলের আবাসিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
(চ) অমর একুশে হলে আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়।
৩। উপাচার্য ১৫ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়মিত অবহিতকরণের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপাচার্য এই সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে উপাচার্য ডাকসু নির্বাচন বিষয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডের অগ্রগতি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। উপাচার্য এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও স্থাপনা নির্মাণসহ একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা বৃহৎ প্রকল্পসমূহের কাজ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও জোরদার করতে তিনি সরকারি অনুদান বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সহযোগিতা চান। উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতি কামনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চীফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই দফায় মতবিনিময় করেছেন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা নির্বাচনী প্রস্তুতি, প্রশাসনিক সহযোগিতা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানামুখী পরামর্শ প্রদান করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সুপারিশগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন এবং নির্বাচনের সার্বিক সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন।
৫। তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাইকার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি, ফিনটেক, পরিবেশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক একটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের সম্ভাব্যতা নিয়ে ঢাকাস্থ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আলোচনা হয়েছে। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
৬। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের নর্থ ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটি’র মধ্যে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালুর বিষয়ে ভারতের মেঘালয়ের নর্থ ইস্টার্ন হিল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মোসেস নাগা-এর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আলোচনা হয়েছে। এসময় উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষক বিনিময়ের সম্ভাব্যতা নিয়েও আলোচনা করা হয়। এবিষয়ে শিগগিরই একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ব্যাপারে তাঁরা ঐকমত্যে পৌঁছেন।
৭। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেসি ল্যাবে ‘ডেমোক্রেসি এন্ড কনস্টিটিউশনাল রিফর্ম’ শীর্ষক এক বিশেষ বক্তৃতা প্রদান করেন। ‘স্টুডেন্টস অব ইয়ুথ ডেমোক্রেসি একাডেমি (Students of Youth Democracy Academy)’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাপ্লাইড ডেমোক্রেসি ল্যাব এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থা আইডিয়া ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এই বক্তৃতার আয়োজন করে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের প্রায় ৯০জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
৮। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ (ডিইউআরএস)-এর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দিনব্যাপী এক ‘দক্ষতা উন্নয়ন কর্মশালা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই কর্মশালা উদ্বোধন করেন।
৯। বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের উদ্যোগে ‘আষাঢ় পার্বণ-১৪৩২’ উৎসব উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দিনব্যাপী উদ্যোক্তা মেলার আয়োজন করা হয়। কোষাধ্যক্ষ ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে উৎসব উদ্বোধন করেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক সংসদ প্রকাশিত ম্যাগাজিন ‘বাদলা দিন’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
১০। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ১ম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম, মার্কেটিং বিভাগের বিবিএ ৩১তম ব্যাচ, ক্রিমিনোলজি বিভাগের ১ম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এবং অর্থনীতি বিভাগের ১ম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১১। ক) চারুকলা অনুষদ ও স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘গ্রুপ স্বাস্থ্যবীমা সমগ্র’ শীর্ষক স্বাস্থ্যবীমা বিষয়ক সচেতনতামূলক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খ) চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগ, কারুশিল্প বিভাগ, ভাস্কর্য বিভাগ এবং সিরামিক বিভাগের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়া হয়।
১২। বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে সিট প্রদানের কাজ চলমান রয়েছে। হলের বিভিন্ন ব্লকের বাথরুম, জানালা মেরামত ও গোসলখানার বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। হলের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার স্বার্থে পরিষ্কারক দ্রব্যাদি ক্রয় করা হয়েছে। নিয়মিত মশার ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে।
১৩। অমর একুশে হল ট্রাস্ট ফান্ডের মূলধন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছে হল প্রশাসন। হলের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে হল প্রভোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুদানের চেকটি তুলে দেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, হলের আবাসিক শিক্ষকবৃন্দ এবং প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, অমর একুশে হলের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৫ লক্ষ টাকা মূলধন দিয়ে ২০০৭ সালের ২২ অক্টোবর এই ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে ফান্ডটি সমৃদ্ধ করা হয়। বর্তমান অনুদানসহ ট্রাস্ট ফান্ডে গচ্ছিত মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০ লক্ষ টাকা।
ট্রাস্ট ফান্ডের গচ্ছিত মূলধনের লভ্যাংশ থেকে প্রতি বছর হলের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে। বৃত্তির জন্য হলের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ বর্ষ সম্মান শ্রেণির ছাত্ররা আবেদন করতে পারবেন। প্রাথমিক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী বর্ষসমূহের পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনায় নেওয়া হবে। পুনঃভর্তি নেয়া কোনো ছাত্র বৃত্তির জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
১৪। জুলাই বিপ্লবে নারী শিক্ষার্থীদের সাহসিকতা ও অবদানকে স্মরণ ও স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৪ জুলাই ২০২৫ রোকেয়া হলে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। ১৪ জুলাই বেলা ২টা থেকে শাপলা টিভি রুমে জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই আন্দোলনে গুরুতর আহত, সরকারি তালিকাভুক্ত রোকেয়া হলের ২জন শিক্ষার্থী- সানজিদা আহমেদ তন্বী ও সিনথিয়া মেহরীন সকাল-কে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। “বিদ্রোহ ও বিপ্লবের ১৪ জুলাই ২০২৪ স্মরণে: প্রদর্শনী, বিতর্ক, স্মৃতিচারণ ও সম্মাননা প্রদান” শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। “জুলাইয়ের রোকেয়ারা” শিরোনামে রোকেয়া হল সাহিত্য সংসদের উদ্যোগে রোকেয়া হলের বিভিন্ন শিক্ষার্থীর জুলাই স্মৃতিচারণমূলক লেখাগুলোর একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
চামেলী ভবনের ৩য় ও ৪র্থ তলার বাথরুমের ব্লকের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
১৫। ক) কবি জসীম উদ্দীন হলের দক্ষিণ ভবন পূর্বাংশের হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসকৃত ৪র্থ ও ৫ম তলার দু’টি ফ্লোর শিক্ষার্থীদের বসবাসের উপযোগী করতে যাবতীয় সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সংস্কারকৃত এ দু’টি ফ্লোরে নতুন করে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থীর আবাসনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
খ) ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ এবং বিপ্লবের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার লক্ষ্যে কবি জসীম উদ্দীন হল প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের যৌথ প্রচেষ্টায় হলের গেস্ট রুমে জুলাই কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪-এর সঠিক ইতিহাস পৌছানোর লক্ষ্যে জুলাই কর্নারে ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্বলিত বই সংরক্ষণের জন্য ৩টি নান্দনিক বুক শেলফ স্থাপন করা হয়েছে।
১৬। ক) সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথমবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে “প্রপঞ্চ ‘জুলাই’: দেখা না দেখা পেরিয়ে” শীর্ষক অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করা হয়। উপাচার্য প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো- সেমিনার, স্মৃতিচারণ, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা প্রভৃতি।
খ) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের (ব্যাচ ১৮) শিক্ষার্থীদের নিয়ে কুমিল্লা ওয়ার সিমেট্রি, ময়নামতি প্রত্নতত্ত্ব, জাদুঘর, শালবন বিহার ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) এ শিক্ষাসফরের আয়োজন করা হয়।
১৭। পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ আয়োজিত লেকচার সিরিজে “Child discipline practices at home and parental attitudes toward physical punishment of children in Bangladesh” শীর্ষক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন Sultan Qaboos University, Oman -এর পরিসংখ্যান বিভাগের Professor M Mazharul Islam, PhD । অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগের চেয়ারম্যান।
১৮। জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষ্যে ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগে স্মৃতিচারণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিভাগের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী এবং আহত শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন। বিভাগের পক্ষ থেকে আহত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করার ঘোষণা দেওয়া হয়। দুইজন জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক তাদের জুলাই দিনগুলির স্মৃতিকথা তুলে ধরেন। জুলাই বিপ্লবে আহত ও নিহতদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
১৯। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে নবীন বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা এবং “আষাঢ়ে আনন্দধারা-১৪৩২” সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০। ক) কবি সুফিয়া কামাল হলের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খ) গণ-অভ্যুত্থান পূণর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালায় কবি সুফিয়া কামাল হলের সকল আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রিয় আবাসিক/অনাবাসিক শিক্ষার্থী নিয়ম-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে স্বতঃস্ফূর্ত ও সুশৃঙ্খলভাবে অংশগ্রহণ করেন।
গ) জুলাই অভ্যুত্থান স¥রণে “স্মৃতিতে জুলাই” শীর্ষক স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
ঘ) হলে ২ জন আবাসিক শিক্ষক নিয়োগদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
ঙ) হলে নাশতার দোকান, বাগান ও হল সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায়-খাবার গ্রহণ করার জন্য যথাক্রমে নাশতার দোকোনের পাশে ১টি বসার ছাউনি এবং পুরাতন সাইকেল স্ট্যান্ডে ২ টি বসার স্থানের ছাউনি এবং ১টি সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরী করা হয়। হলের লবি সংলগ্ন গাড়ি বারান্দায় একটি সুশোভিত বাগানের জন্য বেড প্রস্তত করা হয়।
চ) হলের লিফটের ইনভার্টার- ফটোসেল নতুন সরবরাহ, জেনারেটরের ইঞ্জিন পরিবর্তন, পানির ট্যাংক (প্রত্যাশা ভবনের) মেরামতসহ নানাবিধ সংস্কার কাজ করা হয়।
২১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাব (ADL) এবং যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনস্টার ফাউন্ডেশন ফর ডেমোক্রেসি (WFD) এর যৌথ উদ্যোগে “Electoral Activism - Pursuing Electoral Integrity in Bangladesh” শীর্ষক দুই দিনব্যাপী একটি অনলাইন মিনি-লেকচার সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০টি বিভাগের ২৩৬ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষক এতে অংশগ্রহণ করেন।
ওয়েস্টমিনস্টার ফাউন্ডেশন ফর ডেমোক্রেসির লন্ডন অফিসের নির্বাচন বিষয়ক হেড অব প্র্যাকটিস তাঞ্জা হলস্টেইন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান এবং শ্রীলংকার সেন্টার ফর পলিসি অলটারনেটিভস-এর অ্যাটর্নি-অ্যাট-ল’ লুই এন. গণেশাথাসন এতে লেকচার দেন। মিনি লেকচার সিরিজটি মডারেট করেন অ্যাপ্লায়েড ডেমোক্রেসি ল্যাবের পরিচালক।
১৭/০৭/২০২৫
(মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম)
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
জনসংযোগ দফতর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়